বতর্মান সময়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। ব্যক্তিগত কাজে হোক বা পেশাগত– ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে তা আমরা করতে পারছি ইন্টারনেটের মাধ্যমে। কিন্তু একবার ভাবুন তো ইন্টারনেট না থাকলে এসব কাজ কীভাবে করবে আমরা? যোগাযোগ চলবে কীভাবে? আমাদের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করা বিভিন্ন সফটওয়্যার ও অ্যাপ্লিকেশন চালাতে ইন্টারনেটের প্রয়োজন পড়ে। তবে ইন্টারনেট না থাকলেও যাতে যোগাযোগ রক্ষা করা যায় এমন কিছু অ্যাপও রয়েছে। এই অ্যাপগুলো প্রচলিত ইন্টারনেট বা মোবাইল নেটওয়ার্ক ছাড়াই ব্লুটুথ বা সরাসরি ওয়াই-ফাই সংযোগ দিয়ে মেসেজ পাঠাতে পারে। তাই যেকোনো জায়গায়, এমনকি নেটওয়ার্ক না থাকলেও যে কেউ চ্যাট করতে পারবেন।   

ব্রিজফাই (Bridgefy) হলো এমনই একটি অফলাইন মেসেজিং অ্যাপ। এটি ব্লুটুথের মাধ্যমে ৩৩০ ফুটের মধ্যে টেক্সট মেসেজ পাঠাতে পারে। আপনি যাকে মেসেজ করতে চাচ্ছেন, সে যদি এই সীমার বাইরে থাকে, তাহলে আপনার মেসেজটি আশেপাশের অন্যান্য ব্রিজফাই ব্যবহারকারীদের ডিভাইসের মাধ্যমে রিলে রেসের মতো করে এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে লাফিয়ে তার কাছে পৌঁছায়। এই পদ্ধতিতে তৈরি হয় একটি নির্ভরযোগ্য “মেশ নেটওয়ার্ক” যা ইন্টারনেট বা মোবাইল নেটওয়ার্ক ছাড়াই কাজ করে। অ্যান্ড্রয়েড (Android) এবং আইওএস (IOS) উভয় ডিভাইসেই এটি ব্যবহার করা যায়, ফলে আপনি দূরবর্তী অঞ্চলে বা নেটওয়ার্ক বিঘ্নিত অবস্থায়ও সংযুক্ত থাকতে পারেন। 

ব্রিজফাই ইন্সটল ও ব্যবহারের নিয়ম: 

১। গুগল প্লে-স্টোর (Google play-store) অথবা অ্যাপ-স্টোর (Appstore) থেকে “Bridgefy” লিখে সার্চ দিয়ে ইন্সটল বাটনে বা গেট বাটনে ক্লিক করুন।

২। আপনার সুবিধামত “English” বা “Bangla” ভাষা ঠিক করুন।  

৩। এরপর “Start” বাটনে ক্লিক করুন।

৪। আপনার মোবাইলের লোকেশান ও ব্লুটুথ অন রাখার এক্সেস “Allow” দিন। 

৫। গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন করুন।  

৬। পছন্দমত একটি ইউজার নাম দিন। 

৭। এরপর হোম পেজ দেখাবে। এখানে ‘পাব্লিক চ্যাট’ (Public chat) অপশনে ক্লিক করলে আপনার আশে-পাশে ব্রিজফাই ব্যবহারকারী মানুষদের কন্ট্যাক্ট দেখাবে। একসঙ্গে সবাইকে মেসেজ দিতে চাইলে এর সাহায্যে দিতে পারবেন।  

বাংলাদেশের ২০২৪ এর জুলাই আন্দোলনে ইন্টারনেট শাটডাউনের সময় আন্দোলনকারীরা অফলাইন অ্যাপ ব্যবহার করা শুরু করে যার মধ্যে ব্রিজফাই একটি। এই অ্যাপটি তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখতে এবং ইন্টারনেট না থাকা সত্বেও পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে ব্যবহার করে।  ফলে  আন্দোলন আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে। বিশ্বজুড়ে এমন আরো উদাহরণ রয়েছে যেখানে আন্দোলনের সময় এই অ্যাপ ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন-  আন্দোলনের সময়ে হংকংয়ের বিক্ষোভকারীরা মেশ মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করেছে, যা ব্লক করতে ব্যর্থ হয় চীন । 

সুতরাং, যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা ইন্টারনেট শাটডাউনের সময় সহজে যোগাযোগ স্থাপন করতে ব্রিজফাই একটি কাযর্কর অ্যাপ। আগে থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করে রাখলে, ইন্টারনেট বিভ্রাটের মতো জরুরি অবস্থাতে যোগোযোগ রক্ষা করতে এটির যথাযথ ব্যবহার সম্ভব হবে।

A free in-person training is happening every month!