ইন্টারনেট শব্দটি এসেছে ইন্টার-নেটওয়ার্ক থেকে। ল্যাটিন শব্দ ইন্টার এর অর্থ “ভিতরে”, “পারস্পরিক” ইত্যাদি এবং নেটওয়ার্ক হচ্ছে সুতা, তার জাতীয় কিছু দিয়ে জালের মতো কোন কিছু। ১৯৮০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর ইন্টার-নেটওয়ার্ক কথাটিকে ইন্টারনেট নামে সংক্ষিপ্ত করে।
মূলত ইন্টারনেট হচ্ছে এমন এক কম্পিউটার নেটওয়ার্ক যেখানে সংযোগগুলো একে অপরের সাথে যুক্ত। অক্সফোর্ড অভিধান অনুসারে, ইন্টারনেট হল একটি বৈশ্বিক কম্পিউটার নেটওয়ার্ক যেখানে অনেক নেটওয়ার্ক এক সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং এসব সংযোগ বিভিন্ন তথ্য ও যোগাযোগ সুবিধা দেয়।
নানা ধরনের সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি ইন্টারনেটে সঠিক পন্থায় বিচরণ না করলে বহুবিধ ঝুঁকির সম্ভাবনা রয়েছে। আপনার অসাবধানতায় হারাতে পারেন ব্যাক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং অথবা অনলাইন অ্যাকাউন্ট। ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী, সরকার, বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এবং সাইবার অপরাধীরা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে যা তারা ঐসকল ব্যাবহারকারিদের সহজ লক্ষবস্তুতে পরিণত করে। আপনি সতর্ক না হলে না সুরক্ষার ব্যাবস্থা না করলে আপনার অনলাইন কর্মকাণ্ড এবিং যোগাযোগের তথ্য ফাঁস হতে পারে।
নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে:
- আপনি যখন কোন ওয়েবসাইট পরিদর্শন করেন তখন আপনার আইপি ঠিকানা সহ অন্যান্য মেটা ডেটা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঐ ওয়েব সার্ভারে পাঠানো হয়, যার মধ্যে রয়েছে আপনার আনুমানিক অবস্থান; অপারেটিং সিস্টেম সহ আপনার ডিভাইস সম্পর্কে বিশদ বিবরণ, ইত্যাদি। আপনার ইন্টারনেট সংযোগ নিরাপদ না হলে অনেকেই ( ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী, সরকার, বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এবং সাইবার অপরাধীরা) এই সকল তথ্য দেখতে পারে । একই সময়ে আপনি যদি সেই ওয়েবসাইটে লগইন করার জন্য আপনার ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড লিখেন, ওয়েবসাইটটি নিরাপদ না হলে তারা এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও দেখতে পায়। তাই, প্রতিটি ওয়েবসাইটের URL ( যেমন https://digitalsafetyschool.com) এর শুরুতে https এবং একটি প্যাডলক আইকন আছে কিনা তা নিশ্চিত হয়ে তবেই সেখানে লগইন করুন, যা নির্দেশ করে যে আপনার এবং সাইটের মধ্যে ট্রাফিক এনক্রিপ্ট করা হয়েছে।
- ইন্টারনেট ব্রাউজ করার সময় ম্যালওয়্যার থেকে রক্ষা করার জন্য একটি অ্যাড-ব্লকার ইনস্টল করুন, যা প্রায়শই পপ-আপ বিজ্ঞাপনে লুকিয়ে থাকে।এড ব্লক প্লাস একটি বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য অ্যাড-ব্লকার যা আপনি https://adblockplus.org থেকে ডাউনলোড করতে পারেন ।
- আপনি অনলাইনে কোন সাইটগুলি দেখেন তা ট্র্যাক করা থেকে ওয়েবসাইট এবং বিজ্ঞাপনদাতাদের ব্লক করতে ব্রাউজার এক্সটেনশন ইনস্টল করুন৷ প্রাইভেসি ব্যাজার একটি বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য এন্টি ট্রাকার টুল। যা আপনি আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজারে যুক্ত করে সহজেই ট্রাকার থেকে মুক্ত থাকতে পারেন। এটি আপনি https://privacybadger.org থেকে ডাউনলোড করতে পারেন ।
- কখনই আপনার পাসওয়ার্ড ব্রাউজারে সংরক্ষণ করবেন না। আপনার কম্পিউটার অন্য কার হাতে পড়লে বা চুরি গেলে আপনার সমস্ত পাসওয়ার্ড তারা দেখতে পাবে। যার মাধ্যমে আপনার সকল অ্যাকাউন্ট এর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।
- কোন ওয়েবসাইটে আপনার তথ্য প্রদানের পূর্বে নিশ্চিত হয়ে নিন ওয়েবসাইটটি নিরাপদ কিনা। দেখতে হুবুহু একইরকম নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে ফিশিং ট্র্যাপের মাধ্যমে আপনার তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে। ওয়েবসাইট এর URL বানান ঠিক আছে কিনা পরীক্ষা করুন। কোন লিংকে ক্লিক করলে সেটির গন্তব্য কোথায় সেটি নিশ্চিত হন। এক্ষেত্রে কোন ওয়েবসাইট সম্পর্কে সন্দেহ থাকলে সেটি https://virustotal.com/ থেকে স্ক্যান করে নিতে পারেন।
- ইমেইল বা যে কোন মাধ্যমে প্রাপ্ত কোন লিংক বা সংযুক্তি একটি ভাল মানের অ্যান্টিভাইরাস দিয়ে স্ক্যান না করে কখনই ওপেন করবেন না। আপনার কম্পিউটারে অ্যান্টিভাইরাস ইন্সটল করা না থাকলে এখত্রেও আপনি https://virustotal.com/ থেকে স্ক্যান করে নিতে পারেন।
- সম্ভব হলে, নিজের নয় এমন বা পাবলিক কম্পিউটার ব্যবহার এড়িয়ে চলুন, বিশেষ করে ইন্টারনেট ক্যাফে বা বা বিভিন্ন এয়ারপোর্টে। পাবলিক কম্পিউটার ম্যালওয়্যার বা স্পাইওয়্যার দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে। যদি আপনাকে একটি পাবলিক কম্পিউটার ব্যবহার করতে হয়, আপনার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে লগ ইন করা থেকে বিরত থাকুন, ব্যবহার শেষে নিশ্চিত করুন যে আপনি সমস্ত সেশন থেকে লগ আউট করেছেন এবং আপনার ব্রাউজিং হিস্টরি মুছে ফেলুন৷