দৈনন্দিন জীবনে আমরা বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে থাকি। এছাড়াও অনলাইন থেকে কিছু কিনাকাটা করতেও বিভিন্ন ওয়েবসাইট ভিসিট করি। এই ওয়েব অ্যাড্রেস গুলো তে ক্লিক করার সময় আমরা খেয়াল করি না ঐ লিঙ্কটি যথাযথ কিনা। বিশেষ করে কোন উৎসব এর আগে নানা ধরনের আকর্ষণীয় অফার দেয়া হয় বিভিন্ন ব্যবসায়িক পণ্যে। এই পদ্ধতির সুযোগ নিয়ে অনেক অসাধু ব্যক্তি অথবা চক্র মানুষের থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। কোন নির্দিষ্ট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে এইসব চক্র তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট বানায়ে মানুষদের বিভ্রান্ত করার জন্য একই রকম প্রলোভন দেখায়ে এবং মানুষ এই সব না যেনে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন।
HTTP-এর পূর্ণরূপ হলো HyperText Transfer Protocol। এটি টিম বার্নার্স-লি দ্বারা উদ্ভাবিত হয়েছিল। HyperText হলো এক ধরনের বিশেষ কোডিং করা টেক্সট, যা HyperText Markup Language (HTML) নামক একটি স্ট্যান্ডার্ড কোডিং ভাষার মাধ্যমে তৈরি করা হয়। HTTP ওয়েব ব্রাউজার এবং সার্ভারের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড পদ্ধতি সরবরাহ করে। এটি এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তরের জন্য কিছু নিয়মের সমষ্টি। টেক্সট, ছবি এবং অন্যান্য মাল্টিমিডিয়া ফাইলগুলোর মতো ডেটা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবে শেয়ার করা হয়। যখনই কোনো ওয়েব ব্যবহারকারী তাদের ওয়েব ব্রাউজার খোলেন, তখন তারা পরোক্ষভাবে HTTP ব্যবহার করেন। এটি একটি অ্যাপ্লিকেশন প্রোটোকল, যা বিতরণকৃত, সহযোগিতামূলক এবং হাইপারমিডিয়া তথ্য ব্যবস্থার জন্য ব্যবহৃত হয়।
সাধারণত যেসব ওয়েবসাইট এর অ্যাড্রেস গুলো HTTP দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে তা এটি অরক্ষিত। সহজেই এইসব অ্যাড্রেস এ অ্যাক্সেস করা সম্ভব। এই HTTP দিয়ে তৈরি অ্যাড্রেসে কোন সুরক্ষিত পথে যোগাযোগ হয়না বলেই অর্থাৎ সব ধরনের ডাটা অরক্ষিত অবস্থায় আদান-প্রদান হয়ে থাকে। অ্যাটাকার অথবা অসাধু বাক্তি তাই চাইলেই ডাটা যোগাযোগে বাধা দিতে পারে। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে HTTPS ব্যবহার করে থাকে সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো।
HTTPS-কে HTTP-এর অনুরূপ বলা যেতে পারে, তবে এটি একটি অতিরিক্ত নিরাপত্তা স্তর প্রদান করে। এটি প্রথমে SSL/TLS-এর মাধ্যমে ক্লায়েন্ট এবং সার্ভারের মধ্যে একটি সংযোগ তৈরি করে, যা ক্লায়েন্ট এবং সার্ভারের মধ্যে যোগাযোগকে এনক্রিপ্ট করে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে। যখন একটি ক্লায়েন্ট HTTPS ব্যবহার করে কোনো রিসোর্সের জন্য অনুরোধ করে, তখন সার্ভার এবং ক্লায়েন্ট সেই নির্দিষ্ট সেশনে ডেটা এনক্রিপ্ট করতে ব্যবহৃত এনক্রিপশন কীগুলোর উপর সম্মত হয়। এটি নিশ্চিত করে যে তাদের মধ্যে বিনিময়কৃত ডেটা এনক্রিপ্ট এবং কোডেড থাকে, ফলে তা ইন্টারসেপ্ট বা শনাক্ত করা যায় না।
Hypertext Transfer Protocol (HTTP) হলো একটি প্রোটোকল যার মাধ্যমে ওয়েবে হাইপারটেক্সট স্থানান্তর করা হয়। এর সরলতার কারণে, HTTP ওয়েবে ডেটা স্থানান্তরের জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত প্রোটোকল। তবে, HTTP ব্যবহার করে বিনিময়কৃত ডেটা (যেমন হাইপারটেক্সট) আমরা যেরূপ নিরাপদ আশা করি সেরুপ নিরাপদ নয়। SSL এবং/অথবা TLS-এর মতো ক্রিপ্টোগ্রাফিক প্রোটোকল HTTP-কে HTTPS-এ রূপান্তর করে, অর্থাৎ HTTPS = HTTP + ক্রিপ্টোগ্রাফিক প্রোটোকল।
HTTP এবং HTTPS উভয়ই ওয়েবে ডেটা স্থানান্তরের জন্য ব্যবহৃত প্রোটোকল। HTTPS বেশি নিরাপদ কারণ এটি এনক্রিপ্টেড এবং প্রমাণীকৃত। অ-সংবেদনশীল তথ্য সরবরাহের জন্য HTTP ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয় এবং এটি এই কাজের জন্য যথেষ্ট, অন্যদিকে অনলাইন লেনদেন এবং ব্যবহারকারীর তথ্য সুরক্ষিত করতে HTTPS অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবনের সাথে সাথে নিরাপদ ব্রাউজিংয়ের জন্য HTTPS প্রোটোকলের ব্যবহার স্ট্যান্ডার্ড হয়ে উঠচ্ছে বলে আশা করা হচ্ছে।
দৈনন্দিন জীবনে অনলাইন প্রতারক থেকে মুক্তি পেতে অথবা অসাধু চক্রের পাল্লা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে, কোন লিঙ্ক অ্যাড্রেসে ক্লিক করার পূর্বে অবশ্যই লিঙ্ক এর প্রথমে HTTPS আছে কিনা এবং যে ওয়েবসাইট ভিসিট করতে ছাচ্ছেন তা সঠিক নামে আছে কিনা দেখে নিতে হবে। তাহলে অনলাইনের প্রতারণা থেকে নিজেকে তুলনামুলকভাবে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।